চাল রপ্তানিতে ১৫% প্রণোদনা /২

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ চাল রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অর্থাৎ এখন থেকে কোনো রপ্তানিকারক ১০০ টাকার চাল রপ্তানি করলে সরকার তাকে ১৫ টাকা দেবে। রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে দেশে উৎপাদিত ধান থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উৎপাদিত চাল রপ্তানির বিপরীতে সরকার এই ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক সার্কুলারে ৩০ জানুয়ারি থেকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে (২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) চাল রপ্তানিতে এ হারে প্রণোদনা দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “অনেক দিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। মূলত কৃষকদের সহায়তা করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” বাজারে চালের দামে এর প্রভাব পড়বে কি না সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। পর্যাপ্ত চালের মজুদ আছে।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরেই চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দাম বাড়েনি। বিশেষ করে মোটা চালের দাম একটুও বাড়েনি। তার প্রমাণ টিসিবির চাল বিক্রি করতে গেলে ক্রেতা পাওয়া যায় না। “তাছাড়া গ্রামে কৃষি জমির দাম অনেক কমে গেছে। জমি বিক্রি করতে গেলে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায় না। সার্বিকভাবে কৃষকদের সহায়তা করতেই এই ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তবে এ বিষয়ে কৃষি অর্থনীতিবিদ এম আসাদুজ্জামান বলেন, “শুধু প্রণোদনার সিদ্ধান্ত নিলে হবে না, যে কৃষকদের কারণে এটা দেওয়া হচ্ছে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ প্রণোদনার কারণে চালের যে দাম বাড়বে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধানের দাম বাড়বে কি না? আর বাড়লেও সেই বাড়তি দাম প্রকৃত কৃষকরা পাবেন কি না, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। “বিষয়টিতে নজরদারি না করলে দেখা যাবে, মিল মালিক ও গুটি কয়েক রপ্তানিকারক ভর্তুকি বা প্রণোদনার টাকা পাবেন। কৃষকরা কিছুই পাবে না। সেেেত্র দেখা যাবে, ‘তেলে মাথায় তেল দেওয়াই হয়ে গেল আরকি।” “আর আরেকটি বিষয় হল বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ তো আতপ চাল খায়। আমরা সিদ্ধ চাল উৎপাদন করি। আমাদের এই চাল কেউ আদৌ কিনবে কি না সে বিষয়েও সন্দেহ আছে।” সব মিলিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কতটা ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে, তা নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এই গবেষক।
কারা প্রণোদনা পাবেন : দেশে উৎপাদিত ধান সংগ্রহের মাধ্যমে নিজস্ব কারখানায় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উৎপাদিত চাল রপ্তানির েেত্র নিট এফওবি মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে প্রক্রিয়াকারী-রপ্তানিকারক প্রণোদনা পাবেন। বিশেষায়িত অঞ্চলে (ইপিজেড, ইজেড) অবস্থিত প্রতিষ্ঠান থেকে রপ্তানির েেত্র এ সুবিধা পাওয়া যাবে না। চাল রপ্তানির েেত্র ব্যবহৃত মোড়ক সামগ্রীসহ অন্যান্য উপকরণের ওপর ডিউটি ড্র-ব্যাক ও শুল্ক বন্ড সুবিধা গ্রহণ করা হলে প্রণোদনা দেওয়া হবে না।