বাংলাদেশে এক ম্যাচেই ৪৮ ছক্কা, ৭০ বাউন্ডারি!

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রীতিমত অবিশ্বাস্য ঘটনা। ক্রিকেটের রূপকথাও মনে হতে পারে কারও কারও কাছে। ৫০ ওভারের একটি ম্যাচে কতটা ছক্কা মারতে পারেন ব্যাটসম্যানরা? কিংবা কতটা বাউন্ডারি? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, বাংলাদেশেরই একটি ক্রিকেট ম্যাচে ঘটেছে ৪৮টি ছক্কা এবং ৭০টি বাউন্ডারি মারার ঘটনা। এক ম্যাচে দুই দল মিলে তুলেছে মোট ৮১৮ রান। যার মধ্যে ছক্কা থেকেই এলো কেবল ২৮৮ রান। আর বাউন্ডারি থেকে এসেছে ২৮০ রান। বাউন্ডারি এবং ছক্কা থেকে এলো মোট ৫৬৮ রান। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট ম্যাচে এই ঘটনা ঘটেছে গতকাল সোমবার। রাজধানী ঢাকার সিটি ক্লাব মাঠে নর্থ বাংলা ক্রিকেট একাডেমি এবং ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট একাডেমির ব্যাটসম্যানরা মেরেছে এতগুলো ছক্কা এবং বাউন্ডারির মার।
নর্থ বাংলা ক্রিকেট একাডেমি প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে তোলে ৪৩২ রান। জবাবে ট্যালেন্ট হান্ড ক্রিকেট একাডেমিও কম যায়নি। তারা স্কোরবোর্ডে যোগ করেছে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৮৬ রান। নর্থ বাংলা ক্রিকেট একাডেমি জিতেছে মাত্র ৪৬ রানের ব্যবধানে। নর্থ বাংলা ক্রিকেট একাডেমির ব্যাটসম্যানরা মেরেছে মোট ২৭টি ছক্কার মার। আর ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট একাডেমির ব্যাটসম্যানরা মেরেছে ২১টি ছক্কার মার। বাংলাদেশের এক ক্লাব সংগঠক সৈয়দ আলী আসাফ বলেন, ‘এটা খুবই অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। ঢাকার ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে আমি অনেক বছর ধরে পরিচিত। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা এর আগে কখনও দেখিনি।’ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিভাগের এই ম্যাচের স্কোর, ছক্কা ও বাউন্ডারি মারার রেকর্ড কিংবা ফলাফল নিয়ে এখন চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি বিদেশি মিডিয়ায় পর্যন্ত ফলাও করে নিউজ প্রচার হয়ে গেছে এই ম্যাচের চার-ছক্কা নিয়ে। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ডেইলি মেইল পত্রিকা পর্যন্ত নিউজ করেছে এটা নিয়ে। ডেইলি মেইলে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচগুলোতে প্রায়ই এ ধরনের অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ঘটে থাকে। একই সঙ্গে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগও ওঠে হরহামেশা।’
সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল, ২০১৭ সালে এক বোলার ওয়াইড এবং নো বল ডেলিভারি দিয়ে প্রতিপক্ষকে রান দিয়েছেন ৯২টি। যে কারণে কর্তৃপক্ষ সেই বোলারকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সেই বোলারের দল অভিযোগ তুলেছিল, আম্পায়ারের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের কারণেই তারা এতগুলো ওয়াইড এবং নো দিয়েছিল। লালমাটিয়ার এক বোলার প্রথম ওভারেই দিয়েছিল ১৩টি ওয়াইড এবং তিনটি নো বল। প্রায় প্রতিটি বলই চলে গিয়েছিল বাউন্ডারিতে। এক ওভারেই তারা দিয়েছিল ৮০ রান। এর আগে লালমাটিয়া ১৪ ওভারে ৮৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। প্রতিপক্ষ অক্সিওম মাত্র ৪টি লিগ্যাল ডেলিভারিতেই ৯২ রান করে জিতে যায়। গত বছর অক্টোবরে তখনকার টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট অধিনায়ক (বর্তমানে নিষিদ্ধ) সাকিব আল হাসান মন্তব্য করেছিলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক ম্যাচেই রেজাল্ট আগে নির্ধারিত থাকে। মাঠে শুধু আইওয়াশের জন্য নামা হয়।’ বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপিও সাকিব আল হাসানের এই মন্তব্য সমর্থন করে কথা বলেন। তিনি অভিযোগ তোলেন, ‘ক্রিকেটাঙ্গনে দুর্নীতি অনেক গভীরে প্রোথিত।’