বাউল শরিয়ত সরকার বয়াতির মুক্তির দাবিতে যশোরে মানববন্ধন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাউল শিল্পী শরিয়ত সরকার বয়াতির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে যশোরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সড়কের চিত্রামোড়ে যশোরে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সংহতি প্রকাশ করে। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশি বাধা উপক্ষো করে মিছিলিটি দড়াটানা হয়ে শহরের জজ কোর্ট মোড়ে পথসভার মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়। এসময় অনুষ্ঠিত পথসভায় পুলিশি বাধার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
মানববন্ধন ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু, সাবেক সভাপতি সুকুমার দাস, তির্যক যশোরের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর দাস রতন, ওয়ার্কাস পার্টির (মার্কসবাদী) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, বাসদ (মার্কসবাদী) যশোর জেলার সমন্বয়ক হাছিনুর রহমান, যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদ হাসান বুলু, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোরের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, দৈনিক প্রতিদিনের কথার বার্তা সম্পাদক এইচ আর তুহিন, পরিতোষ বাউল, স্পন্দন যশোরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুর জাহান আরা নীতি প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু।
মানববন্ধন শেষে চিত্রামোড়ে মিছিলের শুরুতে পুলিশ বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে। তবে সাংস্কৃতিক কর্মীরা বাঁধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। পরে শহরের মুজিব সড়কে গিয়ে আরেক দফা পুলিশি বাঁধার মুখে পড়ে মিছিলটি। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের এমন ন্যাক্কারজনক হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে শহরের জজ কোর্ট মোড়ে গিয়ে পথসভা করেন মিছিলকারীরা। এসময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ আউল বাউল লালনের দেশে। তাদের হয়রানি করে, তাদের জেলে রেখে বাংলাদেশ এখন কোন দিকে যাচ্ছে তা আমাদের ভাবতে হবে। দেশে সংস্কৃতিকে ধর্মের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র চলছে। একাত্তরের আগে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্খায় এমন তৎপরতা চলেছিলো। তবে এদেশের বিবেকবান মানুষ সেদিনের সেই চক্রন্ত রুখে দেয়। পাকিস্তান আমলে ধর্মব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হয়নি, আজও হবে না। এসব অপশক্তিকে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে। উল্লেখ, গত ১১ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাশিল এলাকা থেকে শরিয়ত সরকার বয়াতিকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে জেলহাজতে রাখা হয়েছে। এর আগে ১০ জানুয়ারি মির্জাপুর থানায় এই বয়াতির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এক মাদরাসার অধ্যক্ষ।