চৌগাছায় ১৯০ হেক্টর জমিতে গম চাষ

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৗগাছা উপজেলাতে শূন্যের কোটায় নেমে যাওয়া গম চাষ ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করতে শুরু করেছে। ব্লাস্ট ভাইরাস রোগ গম চাষ থেকে কৃষককে অনেকটাই দূরে সরিয়ে দেয়। বলা চলে কৃষক গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এমন এক পরিস্থিতিতে কৃষককে আতঙ্কিত না হয়ে গমচাষে মনযোগী করতে উপজেলা কৃষি অফিস নিরলসভাবে কাজ করে। শূন্য থেকে বর্তমানে উপজেলায় ১৯০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে গমের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন এ অঞ্চলের গম চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৯০ হেক্টর জমিতে নানাজাতের গম চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১১০ হেক্টর বেশি। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকার প্রতিটি গ্রামের চাষিরা এমন এক সময় ছিল ব্যাপকভাবে গম চাষ করতেন। কিন্তু গত ৫/৬ বছর আগে হঠাৎ গমে ভাইরাস দেখা দেয়। এত শত শত বিঘা জমির গম শেষ হয়ে যায়। চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন হাজার হাজার কৃষক। একপ্রকার বাধ্য হয়ে গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন চাষিরা। কিন্তু গত ২-৩ বছর ধরে পুনরায় তারা গম চাষে বেশ ঝুঁকে পড়েছেন। এই সময়ে গমে কোন প্রকার ভাইরাস দেখা না দেয়ায় কৃষক বেশ লাভবানও হন। সে কারণে প্রতি বছরই বাড়তে শুরু করেছে গম চাষ। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কম বেশি গমের চাষ হলেও সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নে এ বছর সব থেকে বেশি গম চাষ লক্ষ্য করা গেছে। সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৮৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বরুপদাহ ইউনিয়নে ৪২, পাশাপোল ইউনিয়নে ২০ ও পৌর এলাকার মাঠে ১৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। মাটির প্রকার ভেদে নানা জাতের গম চাষ করা হয় বলে জানান স্থানীয় চাষিরা। তবে এ বছর বিআর ২৬, ২৭, ২৮, ৩০ ও ৩৩ জাতের গম বেশি লক্ষনীয়। বাংলাদেশে উৎপাদন ও খাদ্যের দিক দিয়ে দানা ফসল হিসেবে গম ২য় স্থানে রয়েছে। অর্থাৎ ধানের পরেই গমের স্থান। ১৯৯৮ সাল থেকে পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু উচ্চ ফলনশীল, তাপসহিষ্ণু ও রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন ও কৃষক পর্যায়ে হস্তান্তর হওয়ায় গমের আবাদ, উৎপাদন এবং ফলন সে সময় থেকে দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। মাটির গুনাগুন ও আবহাওয়া বিবেচনায় নানা ধরনের গম চাষ হয়। উঁচু ও মাঝারি দোআঁশ মাটি গম চাষের জন্য বেশ উপযোগী। সাধারণত উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি গম চাষের জন্য উপযুক্ত। গম চাষের উপযুক্ত সময় হচ্ছে অগ্রহায়ণ মাসের ১ম থেকে ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে তাপ সহনশীল জাত ডিসেম্বর মাসের ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে বপন করা যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন বলেন, চৌগাছা এলাকাতে গম চাষে ভাইরাস দেখা দিলে কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে গম চাষ এক প্রকার ছেড়েই দেন। মূলত এরপর হতে কৃষি অফিস চাষিদের গম চাষে উদ্ধুদ্ধ করতে থাকে। বর্তমানে চৌগাছায় আশানুরুপ গম চাষ শুরু হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।