ঝিনাইদহে আমন ধান সংগ্রহে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সন্ত্রাস

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহে আমন ধান সংগ্রহ অভিযানে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা সন্ত্রাসী আচরণ শুরু করেছে। তালিকা হাতে নিয়ে দালালরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহের বরাদ্দের কাগজ ছিনিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কাজে কতিপয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সন্ত্রাসীরা জড়িত।
শুরুতেই কৃষকদের মাঝে ব্যাপক প্রচারের অভাব ও লটারি প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় অভ্যন্তরীণ আমন ধান সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হলিধানী ইউনিয়নে মাঠে জমি নেই বা ধান চাষ করেননি এমন ব্যক্তিরা লটারির মাধ্যমে ধানের বরাদ্দ পেয়েছেন। হরিণাকুন্ডুর একটি গ্রামেই নাকি ৫০ জন কৃষক লাটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে গোটা জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে নির্বাচিত কৃষককে ব্যাংকে নিয়ে তার কাছ থেকে জোরপূর্বক চেক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হচ্ছে। সোমবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে সদর উপজেলার সুরাট ইউনিয়নে। চেক ছিনতাইয়ে বাধা দেয়ার অপরাধে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
এদিন বিকেলে চুটলিয়া গ্রামের নির্বাচিত কয়েকজন কৃষককে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ অগ্রণী ব্যাংকে নিয়ে আসেন সুরাট ইউনিয়নের শাবু ও কল্যাণপুর গ্রামের মৃত শরাফতের ছেলে জিয়া। শাবু ও জিয়া কৃষকদের ২ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা চুটলিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান চঞ্চল বাধা দিলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বিকেলে জিয়া ও শাবুর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন লোক মোটরসাইকেলে চঞ্চলের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। চঞ্চলের পিতা ও মাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় চঞ্চল বাদী হয়ে সদর থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের ওসি মঈন উদ্দিন বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে হামদহ অগ্রণী ব্যাংকে মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায় কৃষকের চেয়ে ফড়িয়া, দালাল ও মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের ভিড়ই বেশি। কৃষকের কাছ থেকে ৪/৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দপত্র কিনে নিচ্ছে। আর এই বেচা বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। আব্দুর রশিদ নামে এক কৃষক জানান, হালখাতা করার জন্য আমন ধান ওঠার পরপরই তিনি ধান বিক্রি করে দায় দেনা শোধ করেছেন। তার ঘরে ধান বিক্রির পর তিনি কৃষি বিভাগ থেকে লটারিতে বরাদ্দপত্র পেয়েছেন। এখন এই বরাদ্দপত্র কিনতে দালালরা তার বাড়ি ভিড় করছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বদরুদ্দোজা শুভ’র বক্তব্য নিতে তার সরকারি মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।