যশোরে মুক্তিপণ দাবিতে অপহৃত ব্যবসায়ী উদ্ধার : আটক ৭

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে এক ব্যবসায়ীকে ব্যবসার কাজের কথা বলে ফোনে ডেকে নিয়ে অপহরণ, নির্যাতন এবং অভিনব কায়দায় মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণকারীরা পাঁচ লাখ টাকা পায় এই মর্মে একটি স্ট্যাম্পে সাই ও পাঁচ লাখ টাকার চেক সই করিয়ে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভিকটিমের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তবে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপরাধী চক্রের সাত সদস্যকে আটক করেছে।
ভিকটিম হলেন কহিদুল ইসলাম (২৮)। আটককৃতরা হচ্ছে যশোর শহরের জেল রোড এলাকার জাহিদুল ইসলাম (৪৭), সদরের ফতেপুর এলাকার নয়ন (৩৯), শেখহাটি বাবলাতলা এলাকার রাব্বি হোসেন ওরফে সাদ্দাম (২৬), সার্কিট হাউজপাড়া এলাকার গোলাম রসুল (৩৬), পোস্টঅফিসপাড়া এলাকার শওকত হোসেন ওরফে আপন (৩০), ষষ্টীতলা পাড়ার মানিক মণ্ডল (৩১) এবং পাবনার ঈশ্বরদী থানার পিয়ারখালী এলাকার নূর ইসলাম ওরফে সনি (৩৪)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।
যশোর ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, মোবাইলফোনের পুরনো মালামাল বিক্রির কথা বলে গত ৪ জানুয়ারি সকালে কহিদুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে যশোরে ডেকে আনে নয়ন ও নূর। ব্যবসায়ী কহিদুল ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানার কাগমারী এলাকার বাসিন্দা। তিনি যশোরে পৌঁছালে তার পূর্ব পরিচিত নয়ন ও নূর বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আলমগীর হোসেন ওরফে হাজী সুমনের শহরের মাইকপট্টির মেসে আটকে মারপিট করে। তিনি বলেন, ‘কহিদুলের সঙ্গে নয়ন ও নূরের আগে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তিনি ওই সম্পর্ক ছেদ করেন। সেকারণে মাইকপট্টি এলাকার মাস্তান জাহিদুলের মাধ্যমে তাকে প্রথমে শহরের স্টেডিয়ামপাড়ায় আনা হয়। এখান থেকে তাকে মাইকপট্টি আনা হলে নয়ন ও নূর তাকে মারপিট করে এবং কাছে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও ২০ হাজার টাকা উঠিয়ে নেয়। এরপর হাজী সুমনের মেসে আটকে রেখে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে পাঁচ লাখ টাকা পাবে মর্মে স্বাক্ষর ও পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে নেয়। পরদিন সন্ধ্যায় কহিদুলের বড়ভাই রাশিদুল ইসলামের কাছে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।’
এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, রাশিদুলের মৌখিক অভিযোগের পর তিনিসহ সঙ্গীয় ফোর্স ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাইকপট্টি এলাকায় অভিযান চালান। ওই সময় তারা ভিকটিম কহিদুলকে উদ্ধার এবং মুক্তিপণ দাবিকারী দুজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হাজী সুমনের মেস থেকে অপর পাঁচ মুক্তিপণ আদায়কারীকে আটক এবং তাদের কাছ থেকে নগদ সাড়ে ১৮ হাজার টাকা, তিনটি ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, একটি ব্যাংক চেক, মাদকদ্রব্য ও সেবনের সরঞ্জাম এবং বেশকিছু পুরাতন মোবাইলফোনের মাদরবোর্ড / সার্কিট জব্দ করা হয়। মফিজুল ইসলাম আরও বলেন, এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।