আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

তেহরানে সোলেমানির জানাজায় বিপুল উপস্থিতি
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ইরানের নিহত সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানির নামাজে জানাজা উপলক্ষে রাজধানী তেহরানের সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছিল। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে শুক্রবার ভোরে বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে সোলেমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।
রোববার সোলেমানির মৃতদেহ ইরাক থেকে ইরানে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার ইরানের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের জুমার নামাজ চত্বরে তার জানাজা হয় বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম। এখানে সোলেমানিসহ তার সঙ্গে নিহত সবার জানাজা হয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানাজায় ইমামতি করেন, এর এক পর্যায়ে তাকে কাঁদতে দেখা গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। জানাজায় যোগ দিতে তেহরানে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছিল। তাদের অনেককেই কাঁদতে দেখা গেছে। কেউ কেউ নিহত কমান্ডারের ছবি নিয়ে জানাজায় যোগ দিতে এসেছিলেন। গত শতকের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকে যুদ্ধের ময়দানে থাকা সোলেমানিকে জাতীয় বীর হিসেবে দেখে ইরানিরা। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনির পর তিনিই ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাবান লোক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। শোকার্ত লোকজন তাদের মাথার ওপর দিয়ে সোলেমানির কফিন এগিয়ে দেওয়ার সময় ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’ বলে শ্লোগান দেয়। জানাজার পর সোলেমানির কন্যা জয়নব সোলেমানি এক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দেশটিকে ‘অন্ধকার দিনের’ মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, “উন্মাদ ট্রাম্প তুমি ভেবো না আমার বাবার শাহাদাতেই সব শেষ হয়ে গেছে।” তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জানাজা শেষে সোলেমানিসহ নিহত সবার কফিন তেহরানের ইনকিলাব চত্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। এখান থেকে কফিনগুলো ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে আজাদি স্কয়ারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে পার্স টুডে জানিয়েছে।

কেনিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় নিহত ৩
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ কেনিয়ায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক সদস্য ও মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির ২ সদস্য নিহত হয়েছে। কেনিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা লামুর মান্দা দ্বীপের ক্যাম্প সিমবা ঘাঁটিতে রোববার হামলায় চালায় জাঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাব। কেনিয়ান ও মার্কিন বাহিনী, উভয়েই ঘাঁটিটি ব্যবহার করে। এ ঘটনায় তাদের আরও দুই জন আহত হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। বিবৃতিতে মার্কিন বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ড বলেছে, “আহত আমেরিকানদের অবস্থা স্থিতিশীল আছে এবং তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে গুলির শব্দ ও ক্যাম্প সিমবা থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডুলি উঠতে দেখার কথা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল স্টেফেন টাউনসেন্ড তার সহকর্মীদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এ হামলার জন্য যারা দায়ী এবং আমেরিকান ও মার্কিন স্বার্থের ক্ষতি করা আল শাবাবের ‘পশ্চাদ্ধাবন’ করার অঙ্গীকার জানিয়েছেন তিনি। কেনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী (কেডিএফ) বলেছে, “মান্দার বিমানক্ষেত্রের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের একটি উদ্যোগ প্রতিহত করা হয়েছে।” এ ঘটনায় চার জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

মার্কিন সেনাদের বের করে দিতে ইরাকি পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ইরানি সেনা কমান্ডার কাসেম সোলেমানি হত্যাকাণ্ডের পর উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন সেনাদের দেশ থেকে বের করে দিতে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে ইরাকের পার্লামেন্টে। গত শুক্রবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন সোলেমানি, যিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে আলোচিত। ওই হামলার পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি নানা পদক্ষেপের মধ্যে রোববার ইরাকি পার্লামেন্টের অধিবেশনে দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রস্তাবটি পাস হয়। রয়টার্স জানিয়েছে, এই প্রস্তাবে ইরাকের পার্লামেন্ট সদস্যরা দেশ থেকে সব বিদেশি সৈন্যকে ফেরত পাঠাতে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নিতে বলেছে। “যে কোনো বিদেশি সেনার ইরাকে অবস্থানের ইতি অবশ্যই টানতে হবে সরকারকে। বিদেশি সেনাদের কোনো কারণেই ইরাকের মাটি ব্যবহার, আকাশ ও নৌপথ ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।” ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতে বহুজাতিক বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ইরাকে ঘাঁটি গাড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা। ২০০৭ সালে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়ে ধাপে ধাপে অধিকাংশকে ফিরিয়ে আনা হলেও এখনও ৫ হাজার সৈন্য রয়েছে। আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সৈন্যরা ইরাকে থাকলেও তারা সরাসরি অভিযানে নেই। পার্লামেন্টে পাস হওয়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, আইএসবিরোধী যুদ্ধে সহায়তার জন্য ইরাকি সরকার বহুজাতিক বাহিনীর প্রতি যে অনুরোধ জানিয়েছে, তা ফেরত নিতে হবে। এছাড়া ইরাকের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নালিশ জানাতেও সরকারকে পার্লামেন্ট সদস্যরা বলেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। পার্লামেন্টে পাস হওয়া এই প্রস্তাব মানা ইরাকি সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তবে দেশটির শিয়াপ্রধান সরকারের প্রধানমন্ত্রী আদেল আল মাহদি দ্রুত বিদেশি সেনা উপস্থিতি কমানোর জন্য ইতোপূর্বে পার্লামেন্টকে আহ্বান জানিয়েছিলেন।