যে কোনো সময় আন্দোলন

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ যে কোনো সময় সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। সে জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গত বছরে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ মঞ্চের ব্যনারে সমাবেশ করছেন কয়েকটি বিরোধী দলের নেতারা। সোমবার রাজধানীর মৎস্যভবনের সামনে ট্রাকের উপর মঞ্চ বানিয়ে এ সমাবেশ করেন তারা। সেই মঞ্চ থেকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিএনপি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম রব বলেন, ‘এই সরকার লুটপাট করে দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। এতো কিছুর পরেও তারা বলে আমরা লুটপাট করি না। এতো সুন্দর করে বলে যে, শুনলে হাসি পায়। তাদের বক্তব্য শুনলে ক্লাস ওয়ানের বাচ্চারাও টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়।’ পৃথিবীর সব জায়গায় ভোট চুরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভোট ডাকাতি হয়েছে। সারা পৃথিবীতে ভোট হয় দিনের বেলা। আর বাংলাদেশে ভোট নিয়ে গেছে রাতের বেলা। দুনিয়ার সব জায়গায় ভোটের দিন ভোট হয়, আর বাংলাদেশে ২৪ ঘণ্টা আগেই ভোট হয়।’
সরকারকে পদত্যাগ করার জন‌্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানিয়ে রব বলেন, ‘আপনারা তো যাবেনই। তবে ভদ্রভাবে যাবেন না, অভদ্রভাবে যাবেন সেটা ডিসাইড করেন। যেতে হবে। আপনাদের আর থাকার কোনো সুযোগ নাই। সব রাস্তা বন্ধ হয়ে হয়ে গেছে। তবে কীভাবে যাবেন সেটার সিদ্ধান্ত নেন।’ সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘একটু হিসাব করেই মাঠে নামছি আমরা। আমি কারো নামে সমালোচনা করি না, কে কতো বড় নেতা, কে কোন দলে, আমি এগুলো বলি না। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, সারাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যেটুকু কাজ সেটাই করতে হবে। আপনারা সবাই তৈরি থাকেন, যে কোনো সময় এই সরকারের পতনের জন্য মাঠে নামতে হবে। যে কোনো সময় আমরা এই সরকারের পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি দেব। প্রতিজ্ঞা একটাই। আমরা আন্দোলন করব। আজ থেকে আমাদের এই আন্দোলন শুরু। আজ থেকেই লড়াই শুরু। এই লড়াই চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত না বিজয় অর্জিত হচ্ছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা প্রত্যেকেই জানি, এই দিনে আমাদের দেশে কী হয়েছিল। মানুষ চুরি করে, বাংলাদেশের শাসকরাও চুরি করে। কিন্তু এই দেশের ১৬ কোটি মানুষকে বন্দী করে ভোট চুরির মহোৎসব বাংলাদেশের মানুষ অতীতে কখনো দেখে নাই। আমাদের জন্য একটা হৃদয়বিদারক ঘটনা ছিল যেটা আমরা কল্পনাও করতে পারি নাই। ‘আমরা ২০১৪ সালে দেখেছি রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। ২০১৮ সনে আমরা দেখলাম ভোটারদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। আমার আশঙ্কা হয় আগামীতে যে নির্বাচন হবে সেটা মানুষকে বাদ দিয়ে যন্ত্র দিয়ে চুরি করা হবে। আমরা দেখছি প্রত্যেক সপ্তাহে ক্ষমতাশীন দল সভা সমাবেশ করে। কিন্তু কোনদিন কি শুনেছেন বা দেখেছেন পুলিশের অনুমতি নিয়ে তারা কর্মসূচি করেছে? ‘বিরোধী দল কোথাও কোনো সভা সমাবেশ করতে হলে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। পুলিশের কাছ থেকে কেন অনুমতি নিতে হবে? এই প্রশ্ন তোলার মতো ব্যবস্থা আমাদের দেশের আইন আদালতের মধ্যে নাই। আজকে আমরা একটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে বসবাস করছি। আমি চাই আমার ভোট দিতে, আমি আমার গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই।” সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি নূর হোসেন কাসেমী, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট ফজলুর রহমান, শওকত মাহমদু, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম প্রমূখ।