৩ শিশুকে পুড়িয়ে হত্যাকারী মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ইকবালের ফাঁসি

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চাঞ্চল্যকর তিন শিশু পুড়িয়ে হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ তিন শিশু সম্পর্কে তার ভাগ্নে ও ভাইপো ছিলো। আটক হয়ে জামিন পাওয়ার পর এ হত্যাকারী বিদেশে পালিয়ে যায়।
বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের জেলা ও দায়রা জজ মো. নাজিমুদ্দৌলা এ দণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দন্ডিত ইকবাল হোসেন শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর গ্রামের গোলাম নবীর ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমাইল হোসেন জানান, ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি ঝিনাইদহের শৈলকুপা শহরের কবিরপুর নতুন ব্রিজপাড়ায় আগুনে পুড়িয়ে ভাতিজা সাফিন ওরফে শিবলু (৯) ও আমিন (৭) এবং ভাগ্নে মাহিন (১২)- কে হত্যা করেন ইকবাল হোসেন। শিশু আমিন ও সাফিন শৈলকুপার স্কুল শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন দিপুর ছেলে। অপর শিশু মাহিন বোন জেসমিন ও শৈলকুপার মনোহরপুর গ্রামের রাশেদ দম্পত্তির ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ও জমিজমা নিয়ে ভাই দেলোয়ার ও পিতা গোলাম নবীর সাথে বিবাদ সৃষ্টি হয় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মাদকাসক্ত ইকবাল হোসেনের। এ ঘটনায় প্রথমে তার বোন জেসমিন, ভাগ্নে মাহিন ও ভাইয়ের দুই সন্তান সাফিন ও ছোট ভাই আমিনকে হাতুড়িপেটা করে খাটের সাথে বেঁধে ফেলেন। এরপর দাহ্য জাতীয় পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় বড় ভাই দেলোয়ার হোসেনের দুই সন্তান সাফিন ও আমিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অগ্নিদগ্ধ হন বোন জেসমিন ও ভাগ্নে মাহিন। অগ্নিদগ্ধ মাহিন ঘটনার দিন রাত ৯টায় হাসপাতালে মারা যায়। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের পর ইকবালকে গণপিটুনি দিয়ে শৈলকুপা থানায় সোপর্দ করে গ্রামবাসী। একই পরিবারের তিন শিশুকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় শৈলকুপার কবিরপুর গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সাফিন ও আমিনের পিতা দেলোয়ার হোসেন শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ইকবালকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার আদালত ওই মামলার একমাত্র আসামি ইকবালকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে। ঘটনার দিন পুলিশ তাকে আটক করলেও আদালত থেকে জামিন নিয়ে ইকবার হোসেন বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

 

 

 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments