স্মরণে মার্চ ’৭১

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ অগ্নিঝরা মার্চের ১৫তম দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সারা বাংলার অফিস-আদালতে পূর্ণ কর্মবিরতি চলে। রাজধানী ঢাকায় দিনব্যাপী সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি-বেসরকারি ভবন ও যানবাহনে কালো পতাকা ওড়ানো হয়। অসহযোগ আন্দোলনে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। আন্দোলন অস্তিত্বের লড়াইয়ে পরিণত হয় মুক্তিকামী বাঙালির কাছে। এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান কড়া নিরাপত্তার মধ্যে করাচি থেকে ঢাকায় আসেন। বিমানবন্দরে সামরিক গভর্নর লে. জেনারেল টিক্কা খান তাকে স্বাগত জানান। তবে কোন সাংবাদিক ও বাঙালিকে এ সময় বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে হয়নি। এদিন কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে মহিলাদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতার ও টেলিভিশন শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা ট্রাকে করে ভ্রাম্যমাণ গণসঙ্গীত, পথনাটক পরিবেশন করেন। নতুন সামরিকবিধি জারির প্রতিবাদে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে ছাত্র সভার আয়োজন করে। সভা থেকে ছাত্রনেতারা অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান। দেশবাসীকে তাদের অধিকার বঞ্চিত করার প্রতিবাদস্বরূপ শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা তাদের খেতাব বর্জন অব্যাহত রাখেন। চারদিকে শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। শিল্পাচার্য জয়নুলের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সাংবাদিক-সাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী তাদের খেতাব বর্জন করেন।

 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments