যশোর বিএনপির সমাবেশ শনিবার ভোলাট্যাংক রোডে, প্রস্তুতি চূড়ান্ত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শনিবার (২৭ মে) যশোর শহরের ভোলাট্যাংক রোডে জেলা বিএনপির জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১২ টায় অনুষ্ঠেয় জনসমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাড.রুহুল কবির রিজভী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। বিএনপি ঘোষিত ঐতিহাসিক ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
জনসমাবেশ সফল করতে দলটি সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি, এটি সফল করবে যশোরবাসী। ২৭ মের জনসভা যশোরে হবেই। শহরের ভোলাট্যাংক রোডে বিএনপির এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সমাবেশে কী পরিমাণ লোকের সমাগম হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে তিনি উল্লেখ না করলেও এটি অতীতের ন্যায় যশোরের সর্ববৃহৎ জনসমাশে রূপ নেবে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল ২৭ মে যশোরে জনসমাবেশের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি করোনা আক্রান্ত থাকায় আসতে পারছেন না। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী।
কেন্দ্র ঘোষিত এ জনসমাবেশ সফলে যশোর জেলা বিএনপি গত ১৬ মে যশোর মুন্সি মেহেরুল্লাহ (টাউন হল) ময়দান অথবা কেন্দ্রীয় ঈদগাহকে পেতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন। তবে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন টাউন হল ময়দানকে সরকার সমর্থিত একটি পেশাজীবী সংগঠনকে একই দিনে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। আর ঈদগাহে ঈদের জামাতের জন্যে আগেভাগে প্যান্ডেল নির্মাণ থাকায় সেখানে সমাবেশ করা যাবে না বলে জানায় প্রশাসন।
অপরদিকে সমাবেশ প্রতিহতের হুমকি দিয়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে জরুরি প্রেস ব্রিফিং করে যশোর জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সার্বিক বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
এ সময় তিনি বলেন, আগামী ২৭ মে যশোরে বিএনপির সমাবেশ করার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার নেমেছে। এই গণগ্রেফতারের মধ্যেই আমরা জনসমাবেশ সফলে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রথমে আমরা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান ও টাউন হল ময়দানে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু ঈদগাহে ঈদের প্যান্ডেল থাকাতে অনুমতি দেয়নি। আর টাউন হল ময়দানে আমাদের সমাবেশের অনুমতি চাইলে আমাদের না দিয়ে সরকার দলীয় পেশাজীবী একটি শ্রমিক সংগঠনকে অনুমতি দিয়েছে। তিনি বলেন, আপাতত আমরা শহরের ভোলাট্যাংক রোডে সমাবেশ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, জনসমাবেশের বিষয়ে কে-কী হুমকি দিচ্ছে সেটি আমরা আমলে নিচ্ছিনা। হুমকি-ধামকি, বাধা-বিপত্তি থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। আমাদের একটাই টার্গেট ২৭ মে’র জনসমাবেশ সফল করা। হামলা, হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করেই এই সমাবেশ সফল করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের যে দাবি সেই দাবিই সাধারণ জনগণের দাবি। তাই জনগণ তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ে জনসমাবেশে যোগ দেবে। নৈতিক অবস্থান থেকে তারা সরে দাঁড়াবে না।
আওয়ামী লীগ বলছে প্রতি ওয়ার্ডে তারা পাহারা দেবে। সেক্ষেত্রে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান আমাকে সভা সমাবেশ করার অধিকার দিয়েছে। সেই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে রাহ্রীয় ক্ষমতায় আছেন; কিংবা সংবিধান সমুন্নত রাখবার জন্যে যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা যশোরে দায়িত্ব পালন করছেন তারা নিশ্চয়ই এটা বিবেচনা করবে। দায়িত্বটা তাদের। আমিতো আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের বাইরে কিছু বলছি না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব জায়গায় সংঘাত সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করেছে। প্রশাসন দিয়ে চেষ্টা করেছে, গাড়ি বন্ধ করে দিয়ে চেষ্টা করেছে তারা তো কোনো পথই বাকি রাখেনি। নতুন কোনো পথ খোলাও রাখেনি। আমরা সংঘাত এড়িয়েই সমাবেশ করবো। বিএনপি দায়িত্বশীল সংগঠন। সংবিধানে যে অধিকার রয়েছে; সেই অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকবে বিএনপি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, মণিরামপুর থানা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন, যশোর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনজুরুল হক খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপি নেতা শাহাজান বাবু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা প্রমুখ।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে সাথে নিয়ে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ সমাবেশস্থলসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments