যশোর প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে সন্ত্রাস, কুখ্যাত ম্যানসেলসহ আটক ৪

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিনকে লাঞ্ছিত ও কর্মচারী আল আমিনকে মারধরের অভিযোগে শহর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মেহেবুব রহমান ম্যানসেলকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তার ৩ সহযোগীকেও আটক করা হয়। শহরের মুজিব সড়কের প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।
আটক আলোচিত মেহেবুব রহমান ম্যানসেল শহরের ষষ্ঠীতলা সুরেন্দ্রনাথ রোডের ফারহাদুর রহমান আলমাসের ছেলে। হত্যা ও চাঁদাবাজিসহ দেড় মামলার আসামি সে।
আটক অপর তিন জন হলেন ষষ্ঠীতলার সলেমান মীরের ছেলে রাকিব হাসান ওরফে ভাইপো রাকিব (২৫), মীর শওকত আলীর ছেলে সাদি (৩২) ও আশ্রম রোড গাড়োয়ানপট্টির আলী হোসেনের ছেলে অনিক হাসান মেহেদী (২৬)।
যশোর প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট ডা. বাপ্পি কবি শেখর জানান, রোববার দুপুরে ম্যানসেল নামে একজন তাদের কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। রেজিস্ট্রেশন করার পর জরুরি বিভাগে তাকে কিছু ব্যায়াম দেখানো হয়। ব্যায়ামের পর একটি মেশিনে তার থেরাপি নেওয়ার কথা। প্রতিষ্ঠানের কর্মী আল আমিন ওই মেশিনটি প্রস্তুত করে দেন। এসময় অফিসের প্রধান জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন আল আমিনকে ডাক দিলে তিনি রুমের বাইরে আসেন।
থেরাপি মেশিন চালু না করে রুমের বাইরে আসায় ম্যানসেল ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন আল আমিনকে ডেকে নিয়ে মারধর শুরু করেন। তার চিৎকার শুনে মুনা আফরিন নিচে নেমে এলে গালিগালাজ করে তাকে মারতে উদ্যত হন অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে তাকে লাঞ্ছিত করে মোবাইলফোন কেড়ে নেওয়া হয়।
পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল আলমসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ম্যানসেলসহ চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর মুনা আফরিন আটক চারজনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিন/চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলার পর সন্ধ্যায় পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালতে হাজির করা হলে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট মারুফ আহমেদ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন বলেন, আমরা চাকরি জীবনে এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি। অফিসে কর্মরত অবস্থায় এভাবে লাঞ্ছিত হতে হবে কখনো ভাবতে পারিনি।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক শফিকুল আলম বলেন, সরকারি অফিসে ঢুকে কাজে বাধা দেওয়া, কর্মকর্তাকে শ্লীলতাহানি, কর্মচারীতে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারদের আদালতে নিলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামি। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।