যশোরে নিত্যপণ্য বাড়তি দামে বিক্রি অব্যাহত ফের কেজিতে ১০ টাকা বাড়ল খামারের মুরগি

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ যশোরে মুরগির দামের লাগাম কোনমতেই ধরে রাখা যাচ্ছে না। আবারো এ সপ্তাহে প্রতি কেজিতে বাড়ল ১০ টাকা। এখন বাজারে খামারের সোনালী ও লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। ব্রয়লার ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা। তাছাড়া রোজার উপকরণ যা বাড়ার তা ব্যবসায়ীরা রমজানের দু মাস আগে থেকেই সে কাজ সেরে রেখেছেন। রোজার মধ্যে নানান রকম সরকারি তদারকি সংস্থার তৎপরতায় ওনারা আর দাম বাড়াতে চাচ্ছেন না। তবে তদারকি সংস্থার অভিযানে বিক্রেতারা গরুর মাংসের দর ৭০০ টাকা কেজিতে নামিয়ে এনেছেন।
এদিকে উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা রমজানের আগেই তাদের মাসিক বাজার ঘরে উঠিয়ে নিয়েছেন। দোকানিরা বলছেন বাজারে আর সপ্তাহখানেক নিম্নবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাবে। এরপর আর ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। গতকাল শুক্রবার (২৪ মার্চ ) রমজান মাসের প্রথম দিনে যশোরের বড়বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
যশোরের বড়বাজারে গত সপ্তাহে খামারের যে সোনালী ও লেয়ার মুরগি ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল, শুক্রবার তার দাম আরও ১০ টাকা বেড়ে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খামারের ব্রয়লার মুরগিতেও আরও ১০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দামও ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেওয়ার পর আর কমাননি। গতকালও প্রতি হালি খামারের মুরগির ডিম ৪৬ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। বড়বাজারের মুরগি বিক্রেতা আবুল হাশেম লোকসমাজকে বলেন, খামার মালিকরা মুরগি ও ডিমের দাম বেশি নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মুরগির দাম লাগাতার বাড়ার কারণে বিক্রিও কমে গেছে। সাধারণ মানুষ এখন আর ব্রয়লার মুরগিও কিনতে পারছে না।
এদিকে রোজার উপকরণ যেমন, চিড়ে, মুড়ি, পাকা কলা, আখের গুড়, খেজুর, ডাল, ছোলা, বেসন, চিনি, মসলা এখন বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার বড়বাজারে চিড়ে মানভেদে ৫৫ থেকে ৫৮টাকা, হাতে ভাজা মুড়ি ৮০ টাকা, লুজ মুড়ি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, প্যাকেট মুড়ি ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা, পাকা সবরি কলা ১০০ টাকা প্রতি ডজন, দুধসাগর কলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা ডজন, সাগর কলা ৭০ টাকা ডজন, আখের গুড় প্রতি কেজি ভালো মানের ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, মরিয়ম খেজুর প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, দাবাস খেজুর প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, চিকন দানার দেশি মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, মোটা দানার আমদানি করা মসুর ডাল ১০০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৬৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, বেসন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, সাদা লুজ চিনি ১১৫ টাকা, দেশি লাল চিনি ১৩৫ টাকা,বড় এলাচ কেজি ২৬শ টাকা, ছোট এলাচ কেজি ২ হাজার টাকা, কিশমিশ ৫০০ টাকা, ভারতীয় জিরে ৭০০ টাকা, ইরানি জিরে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা এসব পণ্যের দাম রোজার দু মাস আগে থেকেই একটু একটু করে বাড়িয়ে দিয়েছেন।
এদিকে বড়বাজার কাঠেরপুলে মাংস বিক্রেতারা ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে মাংসের প্রকারভেদ সৃষ্টি করেছিলেন। মাসখানেক আগে থেকে ৬৫০ টাকা থেকে বিভিন্নভাবে দাম বাড়িয়ে ৮০০ টাকায় ক্রেতাদের গরুর মাংস কিনতে বাধ্য করে ফেলেছিলেন। গত সপ্তাহে সরকারি তদারকি সংস্থার কড়া হুঁশিয়ারিতে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকায় নামিয়ে এনেছেন। গতকাল শুক্রবার কাঠেরপুলে প্রত্যেক মাংসের দোকানে ৭০০ টাকা দরের রেট বোর্ড ঝুলতে দেখা গেছে। শুধু কাঠেরপুলে নয় পৌর এলাকার সব দোকানেই এখন ৭০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, বড়বাজারে খাসির মাংসের কেজি ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ছাগীর মাংসের কেজি ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কম দামের ছাগীর মাংসকে বিক্রেতারা খাসির মাংস বলে ঠকিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন। অবশ্য ক্রেতারা ছাগীর মাংস না চিনলেও সরকারি তদারকি সংস্থা অভিযানে নামলে এটা পরিষ্কারভাবে ধরা পড়ার কথা।