যশোরে ডায়রিয়ার প্রকোপ ৪ শয্যার বিপরীতে ৪৭ রোগী

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে ডায়রিয়া পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শয্যা সংখ্যার ৪ গুণ রোগি চিকিৎসা নিচ্ছে হাসপাতালে।
সূত্র জানিয়েছে প্রথম রমজান থেকে যশোরে বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিন আক্রান্ত হয়ে নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। রোটা ভাইরাস নামক জীবনু থেকে এ রোগের উৎপত্তি বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
গতকাল শনিবার হাসপাতালে সংক্রামক ওয়ার্ড থেকে জানা যায়, ভোর ৬টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৮জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয় ৪৭ জন। গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন ২শ জন। আক্রান্তদের অধিকাংশ যশোর শহরের স্টেডিয়ামপাড়া, ধর্মতলা, খোলাডাঙ্গা এলাকার। এছাড়া গ্রামাঞ্চল থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন স্টেডিয়ামপাড়ার কাপড় ব্যবসায়ী ওয়াহিদ সাদিক বাপ্পী (৩০) জানিয়েছেন, চাঁচড়া বাজার মোড়ে তিনি কাপড়ের ব্যবসা করেন। শুক্রবার পহেলা রমজানে বাজার থেকে, পেঁয়াজি, বেগুনি, আলুর চপ ছোলাসহ বিভিন্ন ভাজাপোড়া খাবার কিনে তারা কয়েকজন দোকানে ইফতার করেন। এরপর তারাবির নামাজ শুরু হওয়ার আগেই পাতলা পায়খানা, বমি হতে থাকে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেজপাড়ার মৃত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সালেহা বেগম (৫৫) জানিয়েছেন, সেহেরি খাওয়ার পর তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। ইফতার করেন বাজারে খোলা দোকান থেকে ভাজা খেয়ে। সদর উপজেলার নালিয়া গ্রামের জুয়েল থাকেন শংকরপুর। তিনিও ইফতারিতে ভাজাপোড়া খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। শুধু ওয়াহিদ সাদিক, জুয়েল কিংবা সালেহা বেগম নয়। হাসপাতালে ৪৭ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগ ভাজা-পোড়া খেয়ে ইফতার করার পর ডায়রিয়া রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অন্যরা আক্রান্ত হয়েছেন, অতিরিক্ত গরম আবার রাতে ঠান্ডাজনিত কারণে।
এদিকে ডায়রিয়ায় যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ও জায়গার অভাবে তাদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ডে পক্স রোগীর জন্যে ১টি ও ডায়রিয়া রোগীর জন্যে ৪টি বেড রয়েছে। ৪টি বেডের বিপরীতে শনিবার চিকিৎসাধীন ছিলেন। সংক্রামক ওয়ার্ডের মেঝে ছাড়াও লেবার ওয়ার্ড, তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের নিচতলার সিঁড়ি পর্যন্ত খোলা জায়গায় চিকিৎসা নিচ্ছে ডায়রিয়া রোগী। যাদের টয়লেট বা অন্যকোন সুবিধা নেই।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হারুন- অর- রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত দু’দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৭ সালেও এ রকম অবস্থা হয়েছিল। খোলা আকাশের নিচে ভাজা পোড়া খেয়ে ইফতার করার কারণে লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।