মহান স্বাধীনতা দিবস আজ

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ ‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/নতুন নিশান উড়িয়ে/দামামা বাজিয়ে দিগ্বিবিদিক /এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।
সবুজ জমিনে রক্তিম সূর্য খচিত মানচিত্রের এ দেশটির স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকী পূর্তি হচ্ছে আজ। দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ জেলা ও উপজেলায় শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। দিবসটি উপলক্ষে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এছাড়া জাতির সূর্য সন্তানদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় উপসানলয়গুলোতে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটিতে আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। আরও বাণী দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিবসটিতে সংবাদপত্র গুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও টেলিভিশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এ লক্ষ্যে একাত্তরের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করতে শুরু করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এরপর চট্টগ্রাম কালুর ঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে তৎকালীন সেনাবাহিনীর মেজর মুক্তিযুদ্ধের জেড ফোর্সের সর্বাধিনায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সর্বস্তরের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তির সংগ্রামে। ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে মন্ত্রী করে মুজিবনগর সরকার শপথগ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সারা দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয় । দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়।