চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন,অভিযুক্ত ক্যাম্প ইনচার্জ ক্লোজড

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে আব্দুস সালাম নামে এক যুবক পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবককে চোর সন্দেহে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে চোখ বেঁধে অকথ্য নির্যাতন করেন স্থানীয় লক্ষিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই শামছুল হক। নির্যাতনের পর ৫০ হাজার নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় ফাঁড়ি থেকে।
আব্দুস সালাম কোটচাঁদপুরের দোড়া ইউনিয়নের পাঁচলিয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার ও কোটচাঁদপুর মডেল থানার ওসির কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত যুবক আব্দুস সালাম।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ মার্চ সকাল ৯টার দিকে তিনি পাঁচলিয়া বাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় লক্ষিপুর পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ এএসআই শামছুল হক গতিরোধ করে তাকে ক্যাম্পের মধ্যে নিয়ে যান এবং দড়ি দিয়ে চোখ, মুখ ও হাত- পা বেঁধে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। নির্যাতনের ফলে আব্দুস সালাম এএসআই শামছুল হকের চাহিদা মতো ৫০ হাজার টাকা প্রদান করলে তাকে ছেড়ে দেন। ঘটনার দিন তিনি কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এএসআই শামছুল হক নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করে বলেছেন, পাঁচলিয়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে সোলাইমানের দেড় লাখ টাকা হারিয়ে গেলে তিনি ক্যাম্পে অভিযোগ করেন। তাদের দেয়া তথ্যমতে, আব্দুস সালামকে ধরে আনি এবং ভয় দেখানোর জন্য ২/১টা বাড়ি দিয়েছি। তাকে বেশি নির্যাতন করা হয়নি। ৫০ হাজার টাকা আদায় হলেও সেটি আমি গ্রহণ করিনি। সোলাইমান এই টাকা গ্রহণ করেছে বলে এএসআই শামছুল হকের দাবি।
এদিকে সোলাইমান বলেন, আমি কারো নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করিনি। এএসআই শামছুল হক কোন তথ্যের ভিত্তিতে আব্দুস সালামকে ধরলেন তা আমি জানি না।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান জানান, আমি ঘটনার সময় জেলার বাইরে ছিলাম। ফিরে এসে শুনি আব্দুস সালামকে চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এর বাইরে আমি কিছুই জানি না।
নির্যাতিত যুবক আব্দুস সালাম জানান, আমি চুরির সঙ্গে জড়িত নই। এলাকাবাসী সবাই সাক্ষি দেবেন আমি কী করি। আমাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। আমি গরীব মানুষ। ওই টাকা আমি ফেরৎ চাই।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দীন জানান, “ঘটনার সময় আমি থানায় ছিলাম না। ওসি তদন্ত জগন্নাথ চন্দ্র দায়িত্বে ছিলেন। যুবক নির্যাতনের অভিযোগ শোনা মাত্র আমি এএসআই শামছুল হককে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে এনেছি। তিনি বলেন, নির্যাতন ও টাকা আদায়ের ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।