খুলনায় চিকিৎসকদের ধর্মঘট বৈঠকে সুরাহা হয়নি

0

 

খুলনা ব্যুরো ॥ চিকিৎসক নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বিএমএ নেতারা। শুক্রবার (৩ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে খুলনা জেলা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম এ ঘোষণা দেন। এদিন বিকেল ৩টায় বিএমএ ভবনে বৈঠক শুরু হয়, শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
এদিকে, খুলনায় চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় তৃতীয় দিনের কর্মবিরতি চলছে। দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে অব্যাহত রয়েছে চিকিৎসকদের ধর্মঘট। আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা। এমনকী হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তারা। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে রোগীরা। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন।
খুলনায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে গত ১ মার্চ থেকে কর্মবিরতিতে রয়েছেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী বিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি রোগীদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া বিএমএর কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন খুলনা বিএমএ নেতাদেরকে ফোন করে একই নির্দেশনা দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বেলা ১১টায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল চত্বরে যে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কর্মসূচি ছিল তা বাতিল করা হয়। বেলা ১১টায় খুলনা বিএমএ কার্যালয়ে জরুরি সভা করেন চিকিৎসকরা। তবে ঊর্ধ্বতনদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে নির্দেশ থাকলেও প্রায় ৪ ঘণ্টার সভায় কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জরুরি সভা শেষে খুলনার বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলাকারী পুলিশের এএসআই নাঈমকে গ্রেফতার এবং দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
আজ শনিবার (৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় আবু নাসের হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশেরও ডাক দেওয়া হয়। এ ছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় বিএমএ কার্যালয়ে সংগঠনের জরুরি সাধারণ সভা করা হবে। সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর হক নার্সিংহোমে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে রোগীর স্বজনরা ডাক্তার নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে হামলার অভিযোগে রোগী অথৈ এর পিতা সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামান শেখকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে ভুল চিকিৎসা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে ডাক্তার নিশাত আব্দুল্লাহ ও হক নার্সিংহোম এর মালিক ডাক্তার নুরুল হক ফকিরকে আসামি করে পাল্টা মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী নুসরত আরা ময়না।