করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা জরুরি

0

এশিয়া মহাদেশের বহুল জনগোষ্ঠীসম্পন্ন দেশ চীন এখন এক দুঃসহ ব্যাধির মরণ কামড়ে আক্রান্ত। । করোনা ভাইরাস নামে চিহ্নিত এই ব্যাধিটির প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটে হুবেই রাজ্যের উহান শহরে। প্রথম স্বল্পাকারে হলেও এখন তো বেড়ে পাঁচ শতাধিক হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রাণঘাতী রোগে নিহতের সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্ত ছিল ২৭ জন। আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছে দেশটির সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য অধিদফতর। সঙ্গে উদ্বেগ আর অস্বস্তি নিয়ে পুরো বিষয়টির ত্নী নজরদারিতে নেমেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক জরুরী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা একত্রিত হয়ে সারা বিশ্বে এমন ব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদও প্রকাশ করেছেন। কারণ ইতোমধ্যে রোগটির বিস্তার শুধু চীনেই থাকেনি, বিশ্বের অন্যান্য জায়গায়ও এর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি দৃশ্যমান হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রেও একজন রোগীকে চিহ্নিত করা হয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপ-পরিচালক লি বিনের অভিমত এমন প্রাণঘাতী ভাইরাসটির উৎস এবং ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আরও সূক্ষ্ম গবেষণা জোরদার করা হচ্ছে। এদিকে চীনের জাতীয় নববর্ষকে ঘিরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা চীনা নাগরিকরা স্বদেশের ভূমিতে পা রাখছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে সবাই যখন তার কর্ম ও আবাসস্থলে ফিরে যাবেন তখন এই রোগটি দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে এ কারণে আগাম সতর্কতা হিসেবে সংশ্লিষ্টদের ভাবনা-চিন্তা করা এবং কার্যকরী পদপে নেয়া প্রয়োজন।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও তাইওয়ান, ফিলিপিন্স, জাপান এবং দণি কোরিয়ায়ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়েছে। তা আরও সংক্রমণের আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাছাড়া বিশাল ভূখন্ড এবং বিরাট জনসংখ্যা নিয়ে চীনের বিস্তৃত বলয়। সেখানেও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সংশ্লিষ্ট অধিবাসীদের চলাফেরা করতে হয়। আর এসবের মধ্য দিয়ে রোগটির বিস্তার রোধ করা কতখানি সহজ হবে তা অনুমান করা কঠিন। তাই বিমান, রেল এবং সড়কপথের মূল পয়েন্টে যাত্রীদের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০০২-২০০৩ সালে চীনে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কাহিনী বেশি দিনের নয়। সে সময় ৮০০ আক্রান্ত রোগী মারাও যায়। সব কিছু বিবেচনায় এনে নতুন ভাইরাস নিয়ে চীন কর্তৃপ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় পরিস্থিতি পর্যবেণ করছে।
এর আগে বাংলাদেশে সোয়াইন ফু ও বার্ড ফু নিয়েও এক ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শুধু তাই নয়, নিপা ভাইরাসও সারাদেশকে আতঙ্কিত অবস্থায় ফেলে দেয়। বাংলাদেশ স্থল ও বিমানবন্দরগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া জনস্বার্থেই বিশেষ জরুরী। করোনা ভাইরাস যেন কোনভাবেই বাংলাদেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে না পারে সে ব্যাপারে আগাম জরুরী ব্যবস্থা নেয়াও কর্তৃপরে সচেতন দায়বদ্ধতা রয়েছে। বিদেশ থেকে আসা নাগরিকদের পরীা-নিরীা ছাড়া অনুপ্রবেশের অনুমতি দেয়া উচিত হবে না। সংক্রামক রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময়ও লাগে না। স্বতন্ত্রভাবে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে সজাগ-সতর্ক দৃষ্টি নিবদ্ধ না করলে রোগটির ক্রমবিস্তার থেকে রক্ষা পাবে না। তই সরকারকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।