ইবি রেজিস্ট্রারের অডিও ফাঁস

0

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা॥ সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আগের অডিও ভাইরাল নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে গত রোববার রেজিস্ট্রারের আরেকটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে আগে ভাইরাল হওয়া অডিও ফাঁসের বিষয়ে তিনি আক্ষেপ করেছেন। এমনকি ভাইরাল হওয়া অডিও’র কারণে চাপে পড়ার কথা জানাচ্ছিলেন তিনি। সেই সাথে নিজেকে বাঁচাতে বিকল্প কিছু করার কথা বলতে শোনা যায়।
এই অডিও নিয়ে আবারো ক্যাম্পাসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এদিকে তার একাধিক অডিওর বিষয়ে এখনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রোববার ৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের অডিও ফাঁস হয় রেজিস্ট্রারের। যেখানে তার আগে ফাঁস হওয়া অডিও নিয়ে নিজেকে আক্ষেপ করতে শোনা যায়।
অডিওতে তিনি বলেন, ‘আমার ওই অডিও তো ভাইরাল কইরা দিছে, আমার তো বাঁচতে হবে। তিন-চার জায়গা থেকে রাতে ফোন দিয়েছে। আর সাংবাদিকদেরকে বলেছে যে আমি মাইশা আর আসিফের নাম না দিতে বলেছি। আমি বললাম যে আমি বলি নাই এবং আমার সাথে কারো কথা হয় নাই। তোমাকে ভুল ধারণা দিয়েছে। কোনো শালার কাছেই বলি নাই।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহিদ উদ্দীন মো. তারেক ও উপাচার্যের সদ্য অব্যাহতি পাওয়া পিএস আয়ূব আলীকে কথা বলতে শোনা যায়। এদিকে আয়ূবের কথায় উঠে আসে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামও।
এরআগে গত ১৪ মার্চ ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের প্রথম অডিওতে একজন ঠিকাদারের সাথে অর্থ লেনদেন করতে শোনা যায় তাকে। পরবর্তীতে দরকষাকষি নিয়ে আরেকটি ৪৪ সেকেন্ডের অডিও ভাইরাল হয় তার। ১ মে ফাঁস হওয়া সেই অডিওতে রেজিস্ট্রারকে বলতে শোনা যায়, ‘এখন একটা চেক নিয়ে যান। দেয়ার কথা ছিল ৬ লাখ এখন ৪ লাখ দেন।’
অপরদিকে ঠিকাদারকে বলতে শোনা যায়, কুষ্টিয়ার যেকোন জায়গা থেকে নিতে হবে। আমার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারেন। আমি অনেক ইউনিভার্সিটিতে কাজ করেছি। টাকা একবারে নিয়েন।’
ফাঁস হওয়া সকল অডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এদিকে প্রথম অডিও ফাঁসের পর ক্যাম্পাসে সমালোচনা সৃষ্টি হলে বিষয়টি তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে কমিটি করার দুই মাস পার হলেও এখনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি দায়িত্বরতরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম জানান, কিছুদিন ক্যাম্পাসের বাইরে থাকার কারণে প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি হয়েছে। কাজ অনেকটা শেষ। সবকিছু ঠিক থাকলে কালকের মধ্যে জমা দিতে পারবো। এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের সবাই বিষয়টি এড়িয়ে যান।
প্রকৌশলী মুন্সী শহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, ‘আমি এখনো এমন কিছু শুনিনি।’ আর এ ধরণের কথা তো কোনোদিন কোথাও বলেছি বলে মনে হয় না।’ রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘এডিটিংয়ের মাধ্যমে এসব ছড়ানো হচ্ছে। বিষয়গুলো বিব্রতকর। যারা এই চেয়ারে (রেজিস্ট্রার) আসতে চায় তারা এসব করছে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে সে আলোকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।