আইডি কার্ডের ভুল তথ্যে আটকে গেলো রায়লা খাতুনের বয়স্ক ভাতা

0

বাগআচড়া (যশোর) সংবাদদাতা॥ যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের রুদ্রপুর গ্রামের মৃত বিশে মন্ডলের ৮০ বছর বয়সী স্ত্রী রায়লা খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল তথ্যের কারণে আটকে গেলো বয়স্ক ভাতা। দেয়া হয়নি বিধবা ভাতার কার্ডও। তিনি আশি বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কোনো কার্ড পাননি। ৬ বছর আগে তার স্বামী বিশে মন্ডল নব্বই বছর বয়সে মারা যান। তারও কোনো বয়স্ক ভাতার কার্ড ছিলো না।
মোছা. রায়লা খাতুনের বর্তমান ৭ টি সন্তান রয়েছে। তার বড়ো ছেলের বয়স প্রায় ৬০ বছর। রায়লা খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ১০ অক্টোবর ১৯৭৭ উল্লেখ থাকায় বয়স্ক ভাতার কার্ড প্রদানে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু জাফর।
রায়লা খাতুনের পুত্রবধূ বারিছোন বিবি জানান, মেম্বারসহ অনেককে জানানো হয়েছে ভাতার কার্ড করে দেয়ার জন্যে। কিন্তু তাদের কথায় কেউ কর্ণপাত করেননি। তিনি বলেন, কমলা মেম্বার একবার কাগজপত্র ও ছবি নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে আইডি কার্ডে বয়স কম থাকার কারণে তারা কার্ড করে দেননি।
কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু জাফর বলেন, ঘটনা বড়ই দুঃখজনক। তবে যতটুকু জানি, তার আইডি কার্ডে বয়স্ক ভাতা পাওয়ার বয়স ৬২ বছর হয়নি। তিনি বলেন, বিধবাভাতার বরাদ্দ আসলে আগামীতে তাকে দেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, রায়লা খাতুন যদি বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড না পেয়ে থাকেন, তবে উপজেলা বরাবর আবেদন করলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
স্মরণে মার্চ ’৭১
মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ অগ্নিঝরা মার্চের ২৪তম দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যেকার পূর্বনির্ধারিত বৈঠকটি বাতিল হয়ে যায়। এদিকে, করাচি থেকে ‘সোয়াত’ জাহাজে করে আনা পাঁচ হাজার ৬৩০ টন অস্ত্র নামাতে এদিন বাঙালি শ্রমিকরা অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। অবরোধ করে রাখেন জাহাজটি। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন বেশ কয়েকজন স্বাধীনতাকামী শ্রমিক। এছাড়া সৈয়দপুরে বিহারি ও পাকবাহিনী এদিন গণহত্যা চালায়। এদিন বঙ্গবন্ধুর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও ড. কামাল হোসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। প্রায় তিন ঘন্টার ওই বৈঠক শেষে তাজউদ্দীন আহমদ প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বেরিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে আমরা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে অবিলম্বে সংসদ অধিবেশন ডেকে পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছি। একাত্তরের এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আগত মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রায় বিরামহীনভাবে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই। আগামীকালের (২৫ মার্চ ১৯৭১) মধ্যে সমস্যার কোন সমাধান না হলে বাঙালিরা নিজেদের পথ নিজেরা বেছে নেবে। আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। কোন ষড়যন্ত্রই আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, বাংলার জনগণের ওপর কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হলে তা বরদাশত করা হবে না।